ইউটিউব থেকে আয় করতে চান? জেনে নিন সবকিছু

ইউটিউব থেকে আয় করতে চান? জেনে নিন সবকিছুঃ বর্তমানে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় ভিডিও শেয়ারিংয়ের জন্য সবচাইতে জনপ্রিয় মাধ্যম কোনটি? সকলেই একবাক্যে বলবে ইউটিউব। পথচলার শুরু থেকেই নানান ধরণের সুবিধা ও নিত্যনতুন ফীচার নিয়ে ইউটিউব ছাড়িয়ে গেছে সমগ্র ইন্টারনেট দুনিয়ার অন্যান্য ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যমগুলোকে। বিভিন্ন জরিপ অনুযায়ী জানা যায় যে এখন প্রতিদিন প্রতি মিনিটে শত শত কোটি ভিডিও আপলোড হচ্ছে, প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি মানুষ ইউটিউবের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, নিজ পছন্দ মতন বিভিন্ন ভিডিও উপোভগ করছনে।
ইউটিউবের ইতিহাসে ২০০৬ সালের সর্বপ্রথম ভিডিওটির দৈর্ঘ্য ছিলো মাত্র ১৮ সেকেন্ডের। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি, প্রতিদিন হাজার কোটি ভিডিও আপলোডের মাধ্যমে ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যমে ইউটিউব এখন শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে।

তবে ইউটিউবের মূল অধিকারী গুগল কিন্তু থেমে থাকেনি, বরঞ্ছ আরো নতুন আইডিয়ার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আরো আগ্রহী করে তুলেছে ইউটিউব ব্যবহার করের জন্য। ইউটিউব এখন ভিডিও আপলোডকারীডের ভিডিওটি কত সংখ্যকবার দেখা হয়েছে এবং ভিডিও চ্যানেলটির কত পরিমাণে সাবস্ক্রাইবার আছে তার উপর ভিত্তি করে নিয়মিত নগদ অর্থ প্রদান করে থাকে।
এর ফলে আগে শুধু একতরফা ভাবে ভিডিও উপভোগ করা যেমন মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছিলো এখন তারাই ইউটিউব ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করে নিচ্ছে নিজেদের ক্যারিয়ার। ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে প্রথমেই গুগলের এডসেন্সের সাথে যুক্ত হতে হয়। এরপর নিত্যনতুন ভিডিও আপলোড করা নিয়মিত সাবস্ক্রাইবার বাড়ানো এবং ভিডিও দেখার দর্শক সংখ্যাও বারাতে হবে। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে ইউটিউবের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে হলে নিজেকে সৃষ্টিশীল হিসেবে বিকাশ করতে হবে।

অন্যের ভিডিও কপি করে নিজ চ্যানেলে আপলোড করা বা অন্যের কন্টেন্ট নিজের নামে ব্যাবহার করা এই সব কাজগুলো ইউটিবের কাছে খুবই গর্হিত কাজ। এর জন্য ইউটিইউব সরাসরি সেই চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেবার ক্ষমতা রাখে। তাই চেষ্টা করতে হবে নিজের তৈরি করা ভিডিও নিজের চ্যানেলে আপলোড করতে। সাথে অবশ্যই দিতে হবে একটি আকর্ষণীয় ভিডিও টাইটেল যেন মানুষ আগ্রহী হয় ভিডিওটি দেখার জন্য। তবে নীতিগত দিক দেখে এসব ক্ষেত্রে অশ্লীল টাইটেল পরিত্যাগ করা বাঞ্ছনীয় কারণ এতে এই দেশ, সমাজ ও নিজ ব্যাক্তিত্ব এই তিন জিনিসেরই ক্ষতি হয়।

ভিডিও আপলোড করার জন্য অনেক ধরণের ট্যাগ দিতে হবে ট্যাগ অপশনে। কারণ যত বেশি ট্যাগ থাকবে সেই ভিডিওগুলো মানুষের কাছে ততবেশী দৃশ্যমান হবে। চেষ্টা করতে হবে আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করতে। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে কম্পিউটারের স্ক্রীন রেকর্ডারের মাধ্যমে নানান ধরণের প্রয়োজনীয় কাজের টিউটোরিয়াল বা বিভিন্ন মজার জিনিসের ভিডিও রেকর্ড করেও নিজ চ্যানেলে আপনি দিতে পারেন।

ইউটিউবের মাধ্যমে বর্তমানে এই দেশের অনেক মেধাবী তরুণরা নতুন পথ খুঁজে পেয়েছে, বাংলাদেশের টপ রেটেড ইউটিউবাররা এখন প্রতি মাসে ইউটিউব থেকে ১ থেকে ১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করে। তবে তার পেছনে রয়েছে অক্লান্ত পরিশ্রম এবং অসীম ধৈর্য।

ইউটিইউবে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান অর্থাৎ নতুন ইউটিউবারদের জন্য কিছু টিপসঃ


১। ইউটিউবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে শুরুতেই ইউটিউবের আদ্যপান্ত জেনে নিন।

২। একটি টীম তৈরি করুন যাদের কঠোর পরিশ্রম করার ইচ্ছা এবং সৃষ্টিশীলতা উভয়ই বিদ্যমান থাকবে।

৩। অনেকেই মনে করেন ক্যামেরা খুব দামী না হলে ভিডিও ভালো হবেনা, তবে এটি ভুল মনে রাখবেন ভিডিও কোয়ালিটির থেকে বেশী মূল্যয়ন হবে আপনার কন্টেন্টটি কেমন হয়েছে তার উপরে।

৪। সৃজনশীল স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন, গতধারা একইরকম ফানি ভিডিও দেখতে দেখতে অনেকেই এখন বিরক্ত এমন কিছু করার চেষ্টা করুন যা আগে কেউ করেনি বা করলেও খুব কম করেছে। এতে করে আপনার তৈরি কন্টেন্ট দেখতে মানুষের আগ্রহ জাগবে।

৫। প্রচারণা করতে হবে অনেক বেশি, এবং এর জন্য পরিশ্রমটাও করতে হবে আপনার সম্পূর্ণ টীমেরই।

৬। ইউটিউব সম্পর্কে স্বল্প জ্ঞান নিয়ে ভুলেও ইউটিউব ক্যারিয়ার গড়ার কথা চিন্তা করবেন না এতে বৃথা যেতে পারে আপনার সম্পুর্ন পরিশ্রম।

৭। কাজ শুরুর আগে খুব ভালো মতন রিসার্চ করে নিন যে কোন ধরণের কন্টেন্ট এখন আপনার তৈরি করা উচিৎ এর ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সুবিধা হবে।

৮। অনেক অনেক বেশি শেয়ারিং করুন এবং অবশ্যই ভিডিও আপলোডের পর সম্পাদনার সময় ভালো ভালো থাম্বনেইল নির্বাচন করুন যেন লোকে সেই থাম্বনেইল দেখেই আগ্রহী হয় কন্টেন্টটি দেখতে। তবে ভিডিওর সাথে অপ্রাসঙ্গিক থাম্বনেইল ব্যাবহার না করাই ভালো এতে পরবর্তীতে দর্শক ভিডিও দেখতে আগ্রহ হারায়।

৯। মনে রাখতে হবে যত বেশি সাবস্ক্রাইবার আপনি তৈরি করতে পারবেন এবং ভিডিও যত বেশী পরিমাণ দর্শকের কাছে আপনি পৌঁছাতে পারবেন ইউটিউবও আপনাকে সেই পরিমাণের উপর ভিত্তি করেই অর্থ পরিশোধ করবে। সুতরাং আপনার লক্ষ্য নির্দিষ্ট করে সেই পরিমাণ শ্রম এই ক্যারিয়ারের পেছনে ব্যয় করুন।

১০। সুস্থ কন্টেন্ট তৈরি করুন, এবং মানুষকে ভালো ভালো ম্যাসেজ পৌঁছানর চেষ্টা করুন সেই কন্টেন্টগুলোর মাধ্যমে। এতে যেমন আপনার মানবিক দায়বদ্ধতা যেমন পূরন হবে তেমনি আপনার চ্যানেলের প্রতি মানুষ আরো আকৃষ্ট হবে।

Post a Comment

0 Comments

সাফল্য কিভাবে আসে